আগুনে সর্বস্বান্ত,রাত কেটেছে খোলা আকাশের নিচে
মানিকনগরের পুড়ে যাওয়া কুমিল্লা পট্টির বেশির ভাগ মানুষের রাত কেটেছে খোলা আকাশের নিচে। এলাকাবাসীর উদ্যোগে করা প্যান্ডেলে অনেকে রাত কাটালেও ভাগ্য বিড়ম্বনায় ঘুম নেই তাদের চোখে। এদিকে বস্তিবাসীর জন্য কম্বল বিতরণ ও খাবারের ব্যবস্থা করেছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
সহায়-সম্বল হারা শহরবানু ও ফরিদা বেগমের নির্বাক চাহনি বলে দেয় তাদের অসহায়ত্বের কথা। সত্তরোর্ধ্ব বয়সের ভাড়ে ন্যুব্জ এই দুই নারীর নির্ঘুম চোখের কোনের জলও যেন শুকাতে চায় না। কিশোরগঞ্জের এ নারীরা মাটি কেটে নিজেদের জীবিকা উপার্জন করতেন। মানিকনগর বস্তির আগুনে তাদের সব পুড়ে যাওয়ায় রাত কেটেছে খোলা আকাশের নিচে। শত শত মানুষের ঠাঁই হয়েছে বস্তির সামনের রাস্তায়। এখানে শুয়ে বসে রাত কাটিয়েছেন অনেকে। কারো চোখে অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ। কারো চোখে সব হারানোর বেদনা।
অসহায় এক নারী জানান, ঘুম থেকে উঠে কাজে গেছিলাম, আইসা দেখি (এসে দেখি) সব পুড়ে গেছে। কিছুই বের করতে পারি নাই।
এলাকাবাসীর উদ্যোগে ঘুমানোর জন্য খোলা মাঠে প্যান্ডেল করে দিলেও দু’চোখ মেলাতে পারছেন না বস্তির হতদরিদ্র এসব মানুষ।
স্বেচ্ছাসেবক সুজন আহমেদ জানান, স্থানীয় সংসদ সদস্য ও এলাকাবাসীর সহায়তায় রাত ও সকালের জন্য প্রায় দুই হাজার লোকের খাবারের আয়োজন করা হয়। এ ছাড়া প্রত্যেককে দেওয়া হয়েছে একটি করে কম্বল। ওই বস্তির সাড়ে তিনশ’ ঘরে প্রায় দেড় হাজার লোক বসবাস করতেন।
রোববার (২১ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সোয়া ৩টায় রাজধানীর মানিকনগরে আগুনে শতাধিক টিনশেড ঘর পুড়ে যায়। আগুন লাগার পর বিকেল পৌনে ৫টায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সাতটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনে হতাহত হয়নি।
সন্ধ্যায় মুগদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রলয় কুমার সাহা জানান, মানিকনগর ওই এলাকাটি কুমিল্লা পট্টি নামে পরিচিত ছিল। সেখানে টিনশেড শতাধিক বসতঘর রয়েছে। আগুনে যার অধিকাংশই পুড়ে গেছে।